কায়সার হামিদ মানিক, উখিয়া ::
সংশ্লিষ্ট টেকনিশিয়ান, যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য উপকরনের অভাবে বছরের পর বছর বারান্দায় বাক্সবন্দি এক্সরে মেশিন পড়েছিল। হাতে গুনা কয়েকটি সাধারণ টেষ্ট ছাড়া ল্যাবে তেমন কোন পরীক্ষা হতো না। এখন সে দুরাবস্থা কাটিয়ে উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২২ ধরনের এক্সরে ও ১২ ধরনের প্যাথলজি পরীক্ষা করা হচ্ছে স্বল্প ব্যয়ে। তবে এসব সুবিধাদির কথা সাধারণ লোকজন এখনো জানে না। সাধারণ দরিদ্র রোগীদের সুবিধার্থে এসবের সহযোগীতা দিয়ে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)।
গতকাল রবিবার উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্যাথলজি ল্যাবটির টেকনিশিয়ান রফিকুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন সহায়ক যন্ত্রপাতি, কেমিক্যাল ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণের অভাবে এতদিন হাতে গুনা কয়েকটি সাধারণ পরীক্ষা করা হতো এখানে। গত প্রায় এক মাস ধরে এখানে এন্টিএইচসিভি, টিপিএইচএ, এইচআইভি, ব্লাড আর/ই, ডায়াবেটিকস, এস.ইলোকট্রোলিটস সহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যয়বহুল টেষ্ট সহ ১২ প্রকারের পরীক্ষা স্বল্প মূল্যে করা হচ্ছে। তিনি জানান, পর্যায়ক্রমে আরো উল্লেখযোগ্য কিছু পরীক্ষা এখানে করা হবে। তবে এসব পরীক্ষা করা হচ্ছে নূন্যতম ইউজার ফি’র বিনিময়ে। অন্যদিকে বছরের পর বছর হাসপাতালের বারান্দায় বাক্সবন্দি লাশের মত পড়ে থাকা সরকারের আধুনিক মূল্যমানের এক্সরে মেশিনটি ও সম্প্রতি প্রাণ ফিরে পেয়েছে। সংশ্লিষ্ট টেকনিশিয়ান, এক্সরে ফ্লিম, অন্যান্য উপকরণের অভাবে এটি চালানো সম্ভব ছিল না বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম উদ্যোগ নিয়ে এক্সরে মেশিনটি চালু করেছে। তবে এক্ষেত্রে হাসপাতাল ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতি সাংসদ আবদুর রহমান বদি সহ অন্যান্য সদস্যদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় এখনকার দরিদ্র লোকজনের কষ্ট লাঘবেও দ্রুত স্বল্প ব্যয়ে হাতের কাছে স্বাস্থ্য সেবা পেতে ভূমিকা রয়েছে বলে সদর রাজাপালং ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী জানান।
এক্সরে টেকনেশিয়ান মোঃ আনিসুর রহমান জানান, আইওএম এর নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে তাদের সহায়তায় বর্তমানে এখানে লুম্বার স্পাইন, থোরাসিস স্পাইন, চারভিক্যাল স্পাইন সহ ২২ প্রকারের এক্সরে করা হচ্ছে স্বল্প মূল্যের বিনিময়ে। সংশ্লিষ্টরা জানান, আইওএম এর সহায়তায় এসব পরীক্ষা ও এক্সরে সহজে নূন্যতম ফি’র বিনিময়ে করা হচ্ছে। যা এতদিন রোগীদের কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন প্রাইভেট প্যাথলজি ও ল্যাব থেকে করে আনতে হত। এতে রোগী সংশ্লিষ্টদের সময় ও অর্থ উভয় সাশ্রয় হচ্ছে। উখিয়া স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডাঃ আবদুল মাবুদ বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির আন্তরিকতায় বিভিন্ন এনজিও উখিয়া হাসপাতালের রোগীর সুবিধার্থে নানা ধরনের সহায়তা দিয়ে আসছে। হাসপাতাল ম্যানেজম্যান্ট কমিটির সভাপতি ও সাংসদ আবদুর রহমান বদি বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকা উখিয়া ও টেকনাফের লোকজন অপেক্ষাকৃত দরিদ্র ও অনগ্রসর। তাছাড়া এ দুটি উপজেলার স্বাস্থ্য সেবা সহজ লভ্য নয়। রোগীদের সামান্য বিষয়টি নিয়ে কক্সবাজার সদরে ভোগান্তি পেতে হয়। তিনি বলেন, এখানকার দরিদ্র ও অনগ্রসর মানুষের স্বাস্থ্য সেবা হাতের নাগালে পৌছাঁতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন ও ভিশন বাস্তবায়নে কাজ করা হচ্ছে। উখিয়া ও টেকনাফের দুটি হাসপাতালে আইওএম ও বিডিআরসিএস এর সহযোগীতায় আধুনিক মান সম্পন্ন স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেবা প্রদানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি এবং তাদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তাও মিলছে বলে সাংসদ আবদুর রহমান বদি জানান। তিনি অবশ্য এক্ষেত্রে এখানকার অসহায় লোকজনের পাশে আন্তরিকতার সাথে দাঁড়াতে সরকারি ডাক্তার কর্মচারীদের আহ্বান জানান।
পাঠকের মতামত